বৃহত্তর চট্টগ্রামের নারী শিক্ষা প্রসার বিশেষত রক্ষণশীল পরিবারের মেয়েদের আধুনিক শিক্ষার পথ সুগম করার মহান ব্রতে তৎকালীন চট্টগ্রামের কয়েকজন শিক্ষানুরাগী ও সমাজ সেবকের নিরন্তর প্রচেষ্টায় ১৯৫৭ সালের ১ জুলাই থেকে চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ তার শুভ যাত্রা শুরু করে। কলেজটির প্রথম একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়েছিল আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ সংলগ্ন ভিক্টোরিয়া ইসলামিক হোস্টেল ভবনে। প্রতিষ্ঠা লগ্নে কলেজের ছাত্রী সংখ্যা ছিল ১৫০ জন এবং অধ্যাপক অধ্যাপিকা ছিলেন মাত্র ৮ জন। প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপকবৃন্দ প্রায় সকলেই বিনা সম্মানীতে কলেজে পাঠদান করতেন। তাদের এ মিশনে যিনি নেতৃত্ব দান করেছিলেন তিনি হলেন প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ শ্রী যোগেশ চন্দ্র সিংহ। সূচনাপর্বে কলেজটির নাম ছিল চিটাগাং ঊইমেন্স কলেজ। ছাত্রীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে চিটাগাং গার্লস কলেজ নামকরণ হয়। ১৯৬৮ সালে প্রাদেশিকীকরণের পর নাম হয় Chittagong Govt. Girl’s College এবং স্বাধীনতার পরে এ’টি চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৬০-৬৮ সালে কলেজ জাতীয়করণের সময় পর্যন্ত এ কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অধ্যক্ষ মিস ফেরদৌস আরা সাবেত। চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ প্রায় ছয় দশক ধরে এ অঞ্চলে শিক্ষা ও প্রগতির দ্যুতি ছড়িয়ে চলছে। ১৯৬০ সালে চট্টলার কৃতি সন্তান জনাব বাদশা মিঞা চৌধুরীসহ আরো কয়েকজন শুভ ঊদ্যোগী মানুষের প্রচেষ্টায় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্ণর জাকির হোসেন চৌধুরী খুলশী পাহাড়ে কলেজের জন্য প্রায় বিনা মূল্যে বিশ একর জমি প্রাপ্তির ব্যবস্থা করেন। ১৯৬১/১৯৬২ সালে চট্টগ্রামের নৈসর্গিক সৌন্দর্যমন্ডিত অভিজাত এলাকা খুলশীতে কলেজটি স্থানান্তরিত হয়। ১৯৬৪ সালে নির্মিত হয় বর্তমান প্রশাসনিক ও একাডেমিক দু’তলা ভবনটি। ১৯৭৫ সালে দু’তলা ভবনের পশ্চিম পাশে আরেকটি দু’তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়। ১৯৮৬ ও ১৯৯০ সালে দু’দফা সরকারি অনুদানে ছাত্রী হোস্টেল ও সীমানা প্রাচীর নির্মিত হয়। ১৯৯১ সালে আরেক দফা সরকারি অনুদানে ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত কলেজটির বিভিন্ন ভবন সংস্কার করা হয় এবং সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করা হয়। ১৯৯২ সালে কলেজটি সরকারি বিজ্ঞান প্রকল্পের আওতাভুক্ত হয়। ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে ব্যবসায় শিক্ষা চালু হয়। এ ভাবে প্রচেষ্টা ও উন্নয়নের সোনালী স্পর্শে মহীয়ান হয়ে চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ বাংলা দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপ লাভ করে। শিক্ষার পরিবেশ, মান, শৃংখলা ও ফলাফল বিচারে চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক A ক্যাটাগরী কলেজের স্বীকৃতি লাভ করেছে। নিবেদিত প্রাণ শিক্ষক-কর্মচারী ও এক ঝাঁক মেধাবী ছাত্রীর সম্মিলিত প্রয়াসে আশা করা যায় কলেজটির উন্নয়ন যাত্রা অব্যাহত থাকবে।
প্রফেসর তাহমিনা আক্তার নূর ১৯৬৬ খ্রিঃ ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার সীমান্তবর্তী কসবা থানার হাজীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী প্রকৌশলী এম.এ. নূর ও মাতা রওশন আরা নূর। তিনি নরসিংদী সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে ১৯৮১ সালে ১ম বিভাগ এস, এস, সি এবং কিশোরগঞ্জ মহিলা কলেজ থেকে এইচ, এস, সি পাশ করেন ১৯৮৩ সালে। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ১৪’ বি, সি, এস পরীক্ষার মাধ্যমে চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজে তাঁর চাকুরী জীবন শুরু করেন ১৯৯৩ সালে। বিভিন্ন সময়ে তিনি সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ ও চাঁদপুর সরকারি কলেজে বিভাগীয় প্রধান (বাংলা) হিসাবে দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি ২০১৫ খ্রিঃ চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। ২০২১ সালের আগষ্ট মাসের ৯ তারিখে তিনি চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন।
প্রফেসরসালমারহমান১৯৬৪খ্রিস্টাব্দেকুষ্টিয়াজেলারখোকসাউপজেলায়একসম্ভ্রান্তপরিবারেজন্মগ্রহণকরেন।তাঁরপিতাবিশিষ্টসাংস্কৃতিকব্যক্তিত্বওসমাজসেবকমরহুমহাফিজুররহমানএবংমাতামনোয়ারাবেগম।তিনিচট্টগ্রামসরকারিমহিলাকলেজথেকেএইচএসসিএবংচট্টগ্রামবিশ্ববিদ্যালয়থেকেঅর্থনীতিতেসম্মানসহস্নাতকওস্নাতকোত্তরডিগ্রীঅর্জনকরেন।১৯৮৮সালেখাজাআজমেরিকেজিএন্ডহাইস্কুলেসহকারীশিক্ষকপদেযোগদানেরমাধ্যমেতাঁরকর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৯০ সালে একই প্রতিষ্ঠানে তিনি
অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। ১৯৯৩সালেচতুর্দশবিসিএসপরীক্ষায় উত্তীর্ণহয়েপটিয়াসরকারিকলেজেপ্রভাষকপদেযোগদানকরেন।বিভিন্নসময়েতিনিচট্টগ্রামসরকারিমহিলাকলেজএবংসাতকানিয়াকলেজেঅধ্যাপনাকরেন।উপাধ্যক্ষহিসাবেপদায়নেরপূর্বেতিনিবিশেষভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মাধ্যমিকওউচ্চশিক্ষাঅধিদপ্তরেকর্মরত ছিলেন, সংযুক্ত : চট্টগ্রামসরকারিমহিলাকলেজ।তিনিবিভিন্নসামাজিকসংগঠনেরসাথেজড়িতএবংকলামিষ্টওলেখকহিসাবেতারসুপরিচিতিরয়েছে।বাংলাদেশটেলিভিশনচট্টগ্রামকেন্দ্রেরবিভিন্নঅনুষ্ঠানেতিনিআলোচকহিসাবেদায়িত্বপালনকরেথাকেন।২৯নভেম্বর২০২১তারিখেতিনিউপাধ্যক্ষহিসাবেযোগদানকরেন।